১২০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জামায়াতের


MD Nuruzzaman প্রকাশের সময় : অগাস্ট ২৮, ২০২২, ১:৪০ অপরাহ্ন /
১২০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা জামায়াতের

 

 

নীলাকাশ টুডেঃ বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণার মাস খানেক আগ থেকেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জোরেশোরে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এর অংশ হিসেবে প্রায় ১২০টির বেশি আসনে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে দলটি।

জামায়াতের সর্বোচ্চ ফোরাম নির্বাহী পরিষদের একজন সদস্য, আগামী নির্বাচনে জামায়াত একা নির্বাচন করার প্রস্তুতি হিসেবেই প্রার্থী ঘোষণা করছে। জামায়াত নির্বাচনমুখী দল তাই আগে থেকেই প্রার্থীদের মাঠে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছে।

তিনি বলেন, আগামীতে আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির মতো কোনো দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সিড়ি হবে না তারা। একক নির্বাচন করলেও আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনে জামায়াত অংশ নেবে না। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে সক্রিয় থাকবে।

 

রবিবার (২৮ আগস্ট) নিজেদের সাংগঠনিক ভার্চুয়াল প্রগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে প্রায় ২৪ বছরের রাজনৈতিক সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটলো। ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পরই রাজনৈতিক অঙ্গনে বিষয়টি আলোচনা কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।

সূত্র জানায়, একদিকে সরকার বিরোধী আন্দোলন অন্যদিকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধি করছে। আগামী নির্বাচনে ১২০টি আসনের কর্মপদ্ধতিও গ্রহণ করেছে।

 

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন আসনে জরিপ পরিচালনা করছে জামায়াত ইসলামী। জরিপের রিপোর্ট অনুযায়ী দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটি দেশের বিভিন্ন আসনে প্রার্থী নির্বাচন করতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি জেলায় আসন এবং প্রার্থীর নাম নির্বাচন করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মাঠে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পাঁচ সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান হিসেবে রয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মাদ ইজ্জত উল্লাহ। আরো রয়েছেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরোয়ার, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, হামিদুর রহমান আজাদ ও সাবেক শিবির সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত।

দলটির সূত্র জানায়, আগামীতে ১২০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বেশ কিছু আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে যশোর-১ (শার্শা) কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আজীজুর রহমান। যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা)-কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আরশাদুল আলম। যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) অধ্যাপক গোলাম রসুল। যশোর-৫ (মনিরামপুর)-অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক। যশোর-৬ (কেশবপুর)-অধ্যাপক মোক্তার আলী।

বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দীন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য। বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) শাহাদাতুজ্জামান সাবেক এমপি। বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মাওলানা তায়েব আলী। বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান দবিবুর রহমান। বগুড়া -৬ (সদর) বগুড়া শহর আমির ও সাবেক উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান আবিদুর রহমান সোহেল।

 

ঢাকা-১৫ আসনে দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান নির্বাচন করেছিলেন। আগামী নির্বাচনে দুটি আসনে ভোট করতে চান তিনি। তাই তার বাড়ি সুনামগঞ্জ হওয়ায় সেখানকার একটি আসনের পাশাপাশি ঢাকা-১৫ আসনে নির্বাচন করবেন।

এছাড়া ঠাকুরগাঁও- ২ আব্দুল হাকিম, দিনাজপুর-৪ (খানসামা-চিরিরবন্দর): মাওলানা আফতাব উদ্দিন মোল্লা, দিনাজপুর-৬ (নবাবগঞ্জ, বিরামপুর, হাকিমপুর এবং ঘোড়াঘাট) মো. আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী- ২ মো. মনিরুজ্জামান মন্টু, নীলফামারী- ৩, লালমনিরহাট-১ (পাটগ্রাম-হাতিবান্ধা), রংপুর- ৫ মো. গোলাম রব্বানী কুড়িগ্রাম-১ (ভুরঙ্গমারি-নাগেশ্বরী): আজিজুর রহমান স্বপন, কুড়িগ্রাম-৪ (রৌমারী-রাজীবপুর): নুর আলম মুকুল, গাইবান্ধা- ১ (সুন্দরগঞ্জ) মাজেদুর রহমান, গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্যাপুর-পলাশবাড়ী): মাওলানা নজরুল ইসলাম, গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্ধগঞ্জ): ডা. আবদুর রহীম, জয়পুরহাট-১ (সদর-পাঁচবিবি): ডা. ফজলুর রহমান সাঈদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) ড. কেরামত আলী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ড. মিজানুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ নুরুল ইসলাম বুলবুল, রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী -তানোর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, রাজশাহী-৩ অধ্যাপক মাজেদুর রহমান, সিরাজগঞ্জ-৪ মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালি): অধ্যক্ষ আলী আলম, পাবনা-১ ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন, পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আবু তালেব মন্ডল, পাবনা-৫ মো. ইকবাল হোসেন, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) মুহাম্মদ আবদুল গফুর, চুয়াডাঙ্গা-২ (দামুড়হুদা-জীবন নগর): মোহাম্মদ রুহুল আমিন, মেহেরপুর- ১, ঝিনাইদহ-৩ অধ্যাপক মতিয়ার রহমান, বাগেরহাট-৩ মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ শেখ, বাগেরহাট-৪ মো. আব্দুল আলীম, খুলনা-৫ মিয়া গোলাম পরোয়ার, খুলনা-৬ মো. আবুল কালাম আজাদ, সাতক্ষীরা-১ (কলারোয়া-তালা): অধ্যক্ষ ইজ্জতুল্লাহ; সাতক্ষীরা-২ (সদর), সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি-দেবহাটা): মুফতি রবিউল বাশার; কালিগঞ্জ-শ্যামনগর): গাজী নজরুল ইসলাম, পটুয়াখালী- ২ ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, বরিশালে একটি, পিরোজপুর-১ শামীম সাঈদী, শেরপুর- ১, ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া): অধ্যাপক জসিম উদ্দিন, ঢাকা- ১৫ ডা. শফিকুর রহমান, সুনামগঞ্জের একটি আসন, সিলেট- ৫, সিলেট-৬, মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ি), মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া), কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ), কুমিল্লা-১০ নাঙ্গলকোট-সদর দক্ষিণ-লালমাই): মোহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত, কুমিল্লা-১১ সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, ফেনী-৩ (সোনাগাজী-দাগনভুঞা): ডা.ফখরুদ্দিন মানিক, লক্ষীপুর-২ (রায়পুর-সদর আংশিক): মাস্টার রুহুল আমীন, চট্টগ্রাম-১০ : আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া): মাওলানা শামসুল ইসলাম, চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী): মাওলানা জহিরুল ইসলাম, কক্সবাজার-২ (কুতুবদিয়া-মহেশখালী): হামিদুর রহমান আজাদ, কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ)। ১৯৮৬ সালের ৭ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী ৭৬টি আসনে মনোনয়ন দিয়েছিল। ওই নির্বাচনে দলটি ১০টি আসনে বিজয়ী হয়।

২০০১ সালের ১ অক্টোবর নির্বাচনে জামায়াত ১৭টি আসন পায়। মহিলা আসনগুলো থেকে ৪টি আসনে জয়ী হয় তারা। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ২টি আসনে বিজয়ী হয়। ওই নির্বাচনে দলটি জোটগতভাবে ৩৯টি ও ৪টিতে এককভাবে নির্বাচন করে।