ভয়ংকর হয়ে উঠছে কিশোর গ্যাং, এখনই লাগাম টেনে ধরতে হবে


MD Nuruzzaman প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১০, ২০২২, ২:৪৯ পূর্বাহ্ন /
ভয়ংকর হয়ে উঠছে কিশোর গ্যাং, এখনই লাগাম টেনে ধরতে হবে

 

সম্পাদকীয়ঃ দেশজুড়ে কিশোর গ্যাং কালচার দিন দিন ভয়ংকর হয়ে উঠছে। মাদক নেশায় জড়িয়ে পড়া থেকে শুরু করে চুরি, ছিনতাই, যৌন হয়রানি, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে তারা।

এমনকি অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কিংবা অন্য গ্যাংয়ের সঙ্গে তুচ্ছ বিরোধকে কেন্দ্র করে খুনখারাবি থেকেও পিছপা হচ্ছে না কিশোর অপরাধীরা। উদ্বেগের বিষয় হলো, মাদক নেশার টাকা জোগাড় করতে ছোটখাটো অপরাধে জড়ানো কিশোর অপরাধীরা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হয়ে উঠছে ভয়ংকর অপরাধী, এলাকার ত্রাস। আরও উদ্বেগের বিষয়, ভাড়াটে হিসাবে তারা মানুষ হত্যা কিংবা নির্যাতনের মতো অপরাধে যুক্ত হচ্ছে।

গত বুধবার রাজশাহীর গোদাগাড়ী এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এক ভয়ানক কাণ্ড ঘটিয়েছে। এক স্কুলছাত্রকে তুলে নিয়ে নৃশংস নির্যাতন চালিয়েছে তার ওপর। দুই দফা বেধড়ক মারধর করে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে দেওয়া হয়েছে জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা। নির্যাতিত কিশোর এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এলাকাবাসী অভিযোগ করছেন, পুলিশের নিস্পৃহতার কারণে গোদাগাড়ীর কিশোর গ্যাংগুলো সম্প্রতি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

এসব কিশোর গ্যাং এলাকায় হেরোইন পাচারেও লিপ্ত রয়েছে। ছিনতাই ও চাঁদাবাজিও করছে তারা। গোদাগাড়ীতে বর্তমানে পাঁচটি কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। আমরা পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান রাখব, উপরে উল্লেখিত কিশোর নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের যেন দ্রুতই গ্রেফতার করা হয়। শুধু তাই নয়, গোদাগাড়ীতে সক্রিয় সব কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে এলাকাবাসীকে কিশোর গ্যাং কালচারমুক্ত করতে হবে।

কিশোর গ্যাং কালচারের পেছনে স্থানীয় রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ও পেশাদার সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতাকেও দায়ী করছেন সমাজ বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, অবস্থা এখন এমন জায়গায় চলে গেছে যে, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে সামাজিক আন্দোলন জরুরি হয়ে পড়েছে।

তারা আরও বলছেন, আগামী প্রজন্মকে অপরাধমুক্ত রাখতে হলে কিশোর গ্যাংয়ের লাগাম এখনই টেনে ধরতে হবে। তা না হলে দিন দিন পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হয়ে উঠবে। বস্তুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সমাজ ও পরিবারের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া কিশোর গ্যাং কালচার থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো উপায় নেই।

কিশোর গ্যাংয়ের যেসব সদস্যকে কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে, সেখানে তারা সংশোধিত হওয়ার পরিবর্তে আরও ভয়ংকর হয়ে বেরিয়ে আসছে। কিশোর সংশোধন কেন্দ্রগুলো কেন কিশোর অপরাধীদের অপরাধপ্রবণ চরিত্র পালটাতে পারছে না, তা গভীরভাবে ভাবতে হবে।