বয়স্কভাতা পাচ্ছেন না, খোঁজ নিয়ে বৃদ্ধ জানলেন তিনি বেঁচে নেই


MD Nuruzzaman প্রকাশের সময় : অগাস্ট ৪, ২০২২, ১:২৩ অপরাহ্ন /
বয়স্কভাতা পাচ্ছেন না, খোঁজ নিয়ে বৃদ্ধ জানলেন তিনি বেঁচে নেই

 

নীলাকাশ টুডেঃ বয়স হয়েছে ৮০ বছর। বয়সের চাপে কোনো কাজ করতে না পরায় সরকারের কাছ থেকে যে ভাতা পাওয়ার কথা ছিল সেটিও পাচ্ছিলেন না ওই বৃদ্ধ। পরে বাধ্য হয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে খোঁজ নিতে যান তিনি। আর এতেই ওই বৃদ্ধের চোখ উঠল কপালে।

সরকারি অফিসে গিয়ে নিজেই জানলেন, তিনি মৃত। আর এই পরিস্থিতিতে সরকারের খাতায় ‘মৃত’ ওই বৃদ্ধ এখন নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে মরিয়া। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশে। বুধবার (৩ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের চোখে মৃত ওই বৃদ্ধের নাম গঙ্গা সিং। ৮০ বছর বয়সী এই ব্যক্তি ভারতের উত্তরপ্রদেশের আগ্রার মৈনপুরীর মাজরা জাফর এলাকার বাসিন্দা। সরকারের চোখে তিনি মৃত হলেও তা অবশ্য কেবলই ভুলবশত!

তবে এই ভুলের খেসারত গুনতে হচ্ছে অশীতিপর এই বৃদ্ধকে। সরকারের চোখে মৃত হওয়ার কারণে বার্ধক্যভাতা পাচ্ছেন না। আর এই জীবিত ও মৃত এই দুই অবস্থার মাঝে পড়ে বাস্তবিক ভাবেই ‘মৃত্যুর প্রহর’ গুনছেন ভুক্তভোগী এই বৃদ্ধ।

 

সংবাদমাধ্যম বলছে, গঙ্গা সিংয়ের গ্রামের সমবয়সীরা নিয়মমাফিক সরকারি বার্ধক্যভাতা পেলেও তিনি তা পাচ্ছিলেন না। আর ভাতা না পাওয়ার এই কারণ জানতেই গত ৩ জুলাই সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গিয়েছিলেন গঙ্গা। কিন্তু সেখান থেকে তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়, গঙ্গা সিং নামের ব্যক্তি মৃত। সরকারি রেকর্ড তেমনই বলছে। আর সে কারণেই বার্ধক্যভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

জীবিত ব্যক্তি নিজে অফিসে হাজির হয়ে শুনছেন তিনি মৃত! ওই সরকারি কর্মীর কথাটা শুনেই বিস্মিত হয়ে যান গঙ্গা। জলজ্যান্ত মানুষটি সামনে দাঁড়িয়ে, অথচ তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হচ্ছে!

 

সরকারি কর্মীর ওই কথা শুনে জেলা জনকল্যাণ দপ্তরে ছুটে যান গঙ্গা। সেখানে পৌঁছে বিষয়টি জানান তিনি। বৃদ্ধ গঙ্গার কথা শুনে রেকর্ডবুক খতিয়ে দেখেন ওই দপ্তরের এক কর্মী। কিন্তু না, জনকল্যাণ দপ্তর থেকেও জানিয়ে দেওয়া হয়, গঙ্গা সিং মৃত।

পর পর দুই জায়গা থেকে হতাশ হয়ে ফিরে এ বার গঙ্গা ছুটলেন পঞ্চায়েতের অফিসে। পঞ্চায়েত থেকে গঙ্গাকে জানানো হয়, এটা ভুলবশত হয়েছে। মৃতদের তালিকায় তার নাম ঢুকে গেছে। তবে এই ভুল দ্রুত সংশোধন করার আশ্বাসও দেয় পঞ্চায়েত।

 

ভারতীয় এক বার্তাসংস্থাকে গঙ্গা জানান, দারিদ্র্যের কারণে কোনো রকমে সংসার চলে তার। এর মধ্যে সরকারি ভাতার টাকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আরও অনটন দেখা দেয়। কীভাবে সংসার চালাবেন তা ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছিলেন না। কেন বার্ধক্যভাতা দেওয়া হচ্ছে না তা জানতে চেয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকেও চিঠি লিখেছিলেন বলে দাবি করেছেন গঙ্গা।

তবে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে পঞ্চায়েত। তারা জানিয়েছে, কী ভাবে এই ভুল হলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার জন্য দায়ীকে খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।