বিয়ের কথা বলে ডেকে নিয়ে তরুণীকে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৩


MD Nuruzzaman প্রকাশের সময় : অগাস্ট ৫, ২০২২, ১১:২২ অপরাহ্ন /
বিয়ের কথা বলে ডেকে নিয়ে তরুণীকে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৩

 

নীলাকাশ টুডেঃ সিলেটের ওসমানীনগরে ১৯ বছরের এক তরুণী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। বিয়ের কথা বলে ডেকে নিয়ে ৩ জন মিলে তাকে গণধর্ষণ করে।

নির্যাতিত তরুণী শুক্রবার রাতে ওসমানীনগর থানায় গণধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করলে রাতেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৩ আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- উপজেলা উমরপুর ইউপির সিকন্দরপুর মাইজগাঁওয়ের মৃত আহাদ মিয়ার ছেলে মো. জাহাঙ্গীর (৩২), একই ইউপির সিকন্দরপুর মাইজগাঁও গ্রামের মৃত তছর মিয়া চৌধুরীর ছেলে সাইফুর রহমান চৌধুরী রানা ও উপজেলার পূর্ব ব্রাহ্মণ গ্রামের মো. আকলু হোসেন লুদু মিয়ার ছেলে মো. কামাল হোসেন (৩৪)।

পুলিশ ও নির্যাতিতার মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর এলাকার ১৯ বছর বয়সী এক যুবতী গত এক বছর পূর্বে নবীগঞ্জের আউশকান্দিতে তার এক আত্মীয়ের বেড়াতে আসে। আত্মীয়ের বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে গাড়ি নবীগঞ্জের আউমকান্দি এলাকার রুবেল নামক একজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। রুবেল তার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।

গত ৩ আগস্ট রুবেল তার ব্যবহৃত মোবাইল দিয়ে ওই তরুণীর মোবাইলে কল দিয়ে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করতে তাকে ওসমানীনগর থানার সিকন্দরপুর গ্রামে যেতে বলে। বাসে গোয়ালাবাজার নেমে সিকন্দরপুর গ্রামে অটোরিকশায় পৌঁছানোর পর তাকে রুবেল রিসিভ করবে এ কথাই ফোনে চূড়ান্ত হয়। তরুণী কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে ৬ হাজার টাকা নিয়ে সেদিন বিকাল ৩টায় গোয়ালা-বাজার পৌঁছান। সাড়ে ৩টার দিকে সিকন্দরপুর গ্রামে পৌঁছালে রুবেল তাকে তার এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে তোলে। সেখানেই বিয়ের হওয়ার কথা।

কিন্তু কিছুক্ষণ পরই রানা ও করিম নামে দুইজনকে নিয়ে রুবেল তরুণীর হাত পা বেঁধে তাকে ধর্ষণ করতে শুরু করে। ওই ঘরে আটকে রেখে পালাক্রমে রাতভর তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চলে। তাদের বাধা দিতে গেলে তরুণীকে তারা হত্যার হুমকি দিতে থাকে। ফজরের আজানের পর আসামিরা তার বাঁধন খুলে দেয়। এরপর তারা তিনজন তাদের বন্ধু জাহাঙ্গীর ও কামালকে ডেকে তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিতে বলে। কামাল ও জাহাঙ্গীর তাকে মারধোর করে কানের দুলসহ মোবাইল এবং নগদ ৫ হাজার টাকা রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে তরুণী একটা টমটমে বেগমপুর নেমে কান্নাকাটি করতে থাকলে আনোয়ার আলী ও আব্দুর রহিম নামক দুই পথচারী তাকে দেখে ঘটনার এবং বিস্তারিত শুনে থানায় নিয়ে যান।

নির্যাতিতা তরুণীর অভিযোগ, আসামি রুবেল, রানা ও করিম পরস্পর সহযোগিতায় তাকে বসত ঘরে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। আর জাহাঙ্গীর ও কামাল তাদের সহযোগিতা করে। তারা তার ২০ হাজার টাকা দামের মোবাইল সেট, নগদ ৫ হাজার টাকা এবং ৫০ হাজার টাকা দামের স্বর্ণের কানের দোলও কেড়ে নিয়েছে বলে তার অভিযোগ।

ওসমানীনগর থানা পুলিশ অভিযোগ পাবার পরপরই পুলিশ অভিযানে নামে এবং এক ধর্ষক ও দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করে। নির্যাতিতা তরুণী বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসিতে) চিকিৎসাধীন রয়েছে। মামলার অন্য দুই আসামিকেও গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে ওসমানীনগর থানা পুলিশ।

ওসমানীনগর থানার ওসি এসএম মাঈন উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার এজাহারনামীয় অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।